আলোচিত সিলেট ডেস্ক : সিলেট জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জ। সিলেট থেকে এ উপজেলার দূরত্ব ৯১ কিলোমিটার। আড়াই লাখের জনসংখ্যার এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার জন্য হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্টের সংকট রয়েছে। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক। এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী। দ্রুত এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়- ১৯৮১ সালে জকিগঞ্জ উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। জকিগঞ্জ উপজেলার নাগরিকরা ছাড়াও কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার অনেক মানুষ সেবা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। এটি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হলেও প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগী ভর্তি হন। জনগুরুত্বপূর্ণ এ হাসপাতালে নানান সমস্যায় জর্জরিত। রয়েছে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, ফার্মাসিস্ট, ঝাড়ুদার পদের সংকট। শুধু তাই নয় নেই কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নেই টেস্ট ল্যাব। রয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শৌচাগারের সমস্যা। হাসপাতালের ১০ চিকিৎসক, নার্স ৬ টি, কর্মচারীর ৬ টি, ফার্মাসিস্টের ৪ টি ও ঝাড়ুদারের ৩ টি পদ খালি রয়েছে। বিশেষ করে গাইনী চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন প্রসূতি রোগীরা। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক সংকট রয়েছে। ফলে দূরবর্তী সেবাপ্রত্যাশীরা এ সেবা থেকে ব্যাহত হচ্ছেন।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রহিমা খাতুন বলেন- ‘আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু টাইম মত ডাক্তার মিলে না। আর হাসপাতালের যে টয়লেট দেখলেও বমি আসে। ফলে দুই দিন থাকি হাসপাতালের টয়লেটে যাই না।’
হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই শত রোগী আসেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আহাদ। তিনি বলেন- ‘প্রতিদিন গড়ে দুই-আড়াই শ রোগী সেবা নিতে আসেন। আমরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিয়ে থাকি। আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০-৬৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ৩৫ শয্যার এ হাসপাতালের আরও ১৫টি শয্যা বাড়িয়েছি। তাদের সেবায় আমরা সর্ব্বোচ দিয়ে যাচ্ছি।’
জেলা সদর থেকে দূরবর্তী উপজেলা হওয়া প্রতিদিনই রোগীদের চাপ থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন- ‘জেলা সদর থেকে বহু দূরে অবস্থিত হওয়ার কারণে রোগীর চাপ থাকে বেশি। কিন্তু জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় শয্যার অভাবে স্থান দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। বহুবিধ সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ১৯ শয্যার একটি ভবন নির্মাণ করা হলেও অনুমোদন না পাওয়ায় চালু হয়নি।’
