গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেটের গোলাপগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে 'দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরিচ্ছন্নতা' আধুনিকরণ ও উন্নতির দাবিতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সর্বস্থরের মানুষের অংশগ্রহণে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সভায় মুন্না আহমদ মনাই'র সভাপতিত্বে ও সাদিকুর রহমানের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন-ইব্রাহিম আহমদ।
হাসপাতালে এসে সেবা না পেয়ে হয়রানির শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-সিরাজ উদ্দীন পরদেশী, জামাল আহমাদ, জালাল উদ্দীন, আনোয়ার আহমদ, সাদিকুর রহমান, তারেক আহমদ, মিলাক আহমদ, আফতাব আহমদ, আইন উদ্দিন, আফজল আহমদ, মিজান আহমদ, খছরু আহমদ, জয়নুল আহমদ, জেবুল আহমদ, গিয়াস উদ্দিন, জালাল আহমদ, রহমত আলী, ইমরান আহমদ, নিরাক আহমদ, আনসার আহমদ, রুকন আহমদ, জাবেদ আহমদ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। রোগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা হাসপাতালের স্টাফদের কাছে হয়রানি শিকার হতে হয়। রাতে কোন রোগী হাসপাতালে এলে রোগীকে সেবা না দিয়ে তারা দুর্ব্যবহার করেন।'
বক্তারা বলেন, 'হাসপাতালে রোগীরা যায় সেবা পেয়ে সুস্থ হওয়ার জন্য কিন্তু; হাসপাতালের পরিবেশ দেখলে মনে হয় না সেটা হাসপাতাল। রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে অসুস্থ হয়ে ফিরে আসে। ডাক্তাররা ঠিকমতো হাসপাতালে ডিউটি পালন করেন না। তারা টেষ্ট বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। অনতিবিলম্বে হাসপাতাল থেকে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরিচ্ছন্নতা দূর করে আধুনিকরণ ও উন্নতির দাবি জানান তারা। অন্যথায় বড় পরিসরে কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে বলে তারা হুশিয়ারি প্রদান করেন।'
শেষে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সুদর্শন সেনের হাতে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে প্রস্তাবিত একাধিক মৌলিক দাবি লিখিতভাবে তুলে দেন।
দাবিগুলো হলো: ১. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত এবং সকল ডাক্তারদের অন ডিউটিতে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ২.পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ফার্মেসী থেকে ঔষধ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। ৩. নির্ধারিত সময় ব্যতীত ঔষধ কোম্পানীর লোক প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। ৪. রোগীর সকল টেষ্ট হাসপাতালে নিশ্চিত করতে হবে। ৫. হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিয়মিত হাসপাতালে অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচন্ন ও পর্যাপ্ত ডাষ্টবিন নিশ্চিত করতে হবে। ৬. বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ৭. হাসপাতালে অজ্ঞাত রোগীর সাথে সুন্দর ও উত্তম ব্যবহার করতে হবে। ৮. হাসপাতালের নিরাপত্তা স্বার্থে দুইজন আনসার স্বার্বক্ষনিক রাখতে হবে। ৯. নাইট গার্ডের ড্রেস-আপ নিশ্চিত করতে হবে। যাতে কেউ তাকে দেখে ভয় না পায়।১০. ভর্তিরত রোগীদের স্বাস্থসম্মত পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা ও নার্স কর্তৃক রোগীদের আন্তরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ১১. ইমার্জেন্সি বিভাগে দক্ষ্য ডাক্তার নিশ্চিত করতে হবে। ১২. সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তাররা নিয়মিত হাসপাতালে চেম্বার নিশ্চিত করতে হবে। ১৩. হাসপাতালে ধুমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ধুমপান কারী ব্যক্তিকে জরিমানা করতে হবে। ১৪. সকাল-সন্ধ্যায় আগত রোগী ও তাদের সহযোগীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখায় প্রয়োজনে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনীয় সকল ব্লকে সিসি টিভি রাখতে হবে। ১৫. জনস্বার্থে আমাদের দাবিগুলো সর্বোচ্ছ অগ্রাধিকার দিতে হবে। ১৬. আমাদের উপরোক্ত দাবিগুলো ১৫ দিনের ভিতর দৃশ্যমান বাস্তবায়ন হতে হবে। ১৭. হাসপাতালে ইমার্জেন্সী গর্ভবতী মহিলাদের ওটি কিংবা নরমাল ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে হবে।