বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এস এম নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, আজ ০৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সিলেটের সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও দক্ষিণ মশুলা গ্রামের মৃত সমছু মিয়ার পুত্র মো. ময়না মিয়া বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিষয়ে উল্লেখ করা হয় যে, গত ২৩ আগস্ট উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডি SM Nunu miah লিংক https //www.Facebook.Com/SM Nunu miah লাইভে এসে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের ২ বারের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত পূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন।
এতে তিনি উল্লেখ করেন মুহিবুর রহমান একজন খারাপ প্রকৃতির লোক হন। তিনি মানুষকে গালিগালাজ করেন। এটা তার স্বভাব। এছাড়া তিনি জামাত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। ২০২১ সালে মুহিবুর রহমানকে উপজেলা চেয়ারম্যান তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। মুহিবুর রহমান নাকি ২০০১ সালে তাহার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন।
এতে আরও উল্লেখিত হয় যে, তিনি রাতের বেলা মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে থাকেন এবং সরকার ও জনস্বার্থ বিরোধী কাজে লিপ্ত রয়েছেন। এমন কয়েকটি অভিযোগ এনে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নজরে আসলে বাদী ময়না মিয়া মেয়র মুহিবুর রহমান এর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হিসেবে আদালতে গিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০১৮ইং ২৫/১,২৯/১ ও ৩১ ধারায় মামলাটি দায়ের করছেন। (মামলা নং - ১৭১,২০২৩ ইং)।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাদী ময়না মিয়া জানান, আমি আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। মুহিবুর রহমান একজন সৎ ও সাহসী যোগ্য ব্যক্তি। উনার বিগত পৌর নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একজন সমন্নয়ক ছিলেন বলে ও জানান তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া দীর্ঘদিন যাবত উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অনিয়ম করে আসছেন। তার সাথে থাকা লোকজনকে দিয়ে মানুষকে নানা লোভ দেখিয়ে টিউবওয়েল,।ওয়াসব্লক ও রাস্তা কালভার্টের নামে মসজিদ, প্রতিবন্ধী ও নিরীহ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার সঙ্গীরা এমন কাজ করলে তিনি তা অস্বীকার করে আসলে ও সম্প্রতি টাকা লেনদেনের কয়েকটি কল রেকর্ড পাশ সহ অনেক তথ্য প্রমাণ দেখা যায়।
সম্প্রতি আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছে। এই মামলায় তার পিএস দবির মিয়া সহ তাকে আসামি করা হয়। এবং চেক জালিয়াতি সহ ৪ লক্ষ টাকা আত্মসাধের অভিযোগ আনেন যুবলীগ নেতা (খাজাঞ্চি) জামাল আহমদ।
মুহিবুর রহমান একজন জনপ্রিয় মানুষ ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে ভুক্তভোগীরা তার কাছে এসে নালিশ করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে দেশ বিদেশে সকলকে সচেতনতামূলক পোস্ট ভিডিও ও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেন। মুহিবুর রহমান একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের একসময় কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। পরপর দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমানে বিপুল ভোটে প্রথম পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে জনস্বার্থে কাজ করছেন। এমন সময়ে মানহানি কর অসত্য ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় এর বিরুদ্ধে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করি। মামলাটি মহামান্য আদালত আমলে নিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিও প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য যে, বিগত ক'দিন যাবৎ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনুর কথা বার্তায় দ্বিধা দ্বন্দ্ব চলছিল। অনেকেই এটাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান পৌর মেয়রের বাহাস বলে আখ্যা দেন। নানা অনিয়মের কারণে তথ্য উপাত্ত থাকায় মেয়র মুহিবুর রহমান উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদ মূলক কথাবার্তা বলে আসছিলেন। এর মধ্যেই চোর বলে আখ্যা দেওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষেপে গিয়ে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা জানাইয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল হককে বাদী বানিয়ে তিনজনকে সাক্ষী হয়ে সাইবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। তাহার মামলাটি ও পিবিআই এর কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।