জৈন্তাপুর প্রতিনিধি : জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের নিজপাট পানিয়ারা হাটি মহল্লার বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বিশিষ্ট সমাজসেবক এবং জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ব্যবসায়ী ইলিয়াস উদ্দিন লিপু ও বদরউদ্দিন পারভেজ'র পিতা সিরাজ উদ্দিন (বড়ল সিরাজ) ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া...রাজিউন)।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সিলেট শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল (৮২) বছর।
সিরাজ উদ্দিন বিগত কয়েক বছর থেকে বার্ধক্য জনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৯ পুত্র, ৪ কন্যা সন্তান নাতি-নাতনী সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন,গুনগ্রাহী এবং রাজনৈতিক সহকর্মী রেখে গেছেন। তিনি এলাকার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। এলাকার অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন।
রোববার বিকেল ২টায় জৈন্তাপুর রাজবাড়ি মাঠে মরহুম সিরাজ উদ্দিনের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মরহুমের বড় নাতী আব্দুল্লাহ আল-সাঈদ।
জানাজার নামাজের পূর্বে মরহুমের জীবনের স্মৃতি চারণ করেন সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি বাল্য কালের স্মৃতি চারণ করে বলেন, ছোট বেলায় আমি যখন আমার পিতা মরহুম ক্যাপ্টেন রশিদের সাথে জৈন্তাপুর বাজারে আসতাম তখন সিরাজ উদ্দিন সহ আমাদের আরও কয়েকজন সহপাটি বন্ধু এক সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটাতাম। সিরাজ উদ্দিন ছিলেন মহান মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের পরিবারের অনেক অবদান আছে। মহান মুক্তিযোদ্ধে তারঁ এক ভাই শহীদ হয়েছিলেন। জৈন্তাপুর উপজেলার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তারঁ অনেক অবদান রয়েছে। সিরাজ উদ্দিন ছিলেন একজন খাটিঁ দেশ-প্রেমিক ও আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণকর্মী। সিরাজ উদ্দিনের মৃত্যুতে জৈন্তাপুরে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পুরন হবার নয়। সিরাজ উদ্দিনের অবদান এই অঞ্চলের মানুষ আজীবন স্মরণ রাখবে।
মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে তাহার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
নামাজের জানাজায় অংশ গ্রহন করেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী, জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আবুল মৌলা চৌধুরী, লামনীগ্রাম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলনা আব্দুল জব্বার, নিজপাট চুনাহাটি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল হামিদ, নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইন্তাজ আলী, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর তৈয়ব আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মুফিজুর রহমান, জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, জৈন্তাপুর বিয়াম ডা: কুদরত উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ান বিলাল, দৈনিক জৈন্তাবার্তা পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমদ, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির খান, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনজুর আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মো: কুতুব উদ্দিন ।
এছাড়াও রাজনৈতিক নেতাকর্মী, আলেম সমাজ, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার কয়েক হাজার মানুষ মরহুমের জানাজার নামাজে শরিক হন। পরে মাহুতহাটি জামে মসজিদ সংলগ্ন তাদের পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।