রবিবার (২৮ মে) দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন সিলেট দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী। দণ্ডপ্রাপ্ত সুরমা বেগম সিলেটের বিয়ানীবাজারের উত্তর আকাখাজনা গ্রামের রুনু মিয়ার স্ত্রী। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত মামলার আসামি রুনু মিয়া ও একই উপজেলার চারখাই গ্রামের নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে খালাস প্রদান করেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, চাচীর অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় শিশু সোহেলকে। হত্যার ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় শিশুর পিতা খসরু বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৮ জুন তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় আদালত ঘটনার সাথে জড়িত সুরমা বেগমকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ২০১ ধারায় তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরও দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন সুরমা বেগম।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ জুন বাড়ির সামনে ভোর বেলা আম কুড়ানোর পর হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায় শিশু সায়েল আহমদ সোহেল। অনেক খোঁজাখুজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সোহেলের পিতা গৃহবধূ সুরমা বেগমের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে গোসলের কক্ষে রক্ষিত একটি ড্রামে সোহেলের লাশ কম্বল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পান। মামলার আসামি সুরমা বেগমের সাথে অপর আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমের পরকিয়া প্রেম ছিলো।
ঘটনার দিন পরকিয়া প্রেমিক নাহিদুল সুরমা বেগমের বসত ঘরে সকালে ৬টার দিকে প্রবেশ করে। আম কুড়ানোর এক পর্যায়ে নিহত সোহেল তার চাচীর কক্ষে প্রবেশ করে তাদেরকে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর সোহেলকে গাছের ডাল দিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করে ড্রামে রাখা হয়।
